(সুমিত রায়)
কাল Soma Santra দির থ্রেডটায় একটা কমেন্ট করেছিলাম, সেখানে Ahmad Mustafa আমাকে অরগাজম গ্যাপ বা পুরুষ ও নারীর অর্গাজমের মধ্যে যে বড় ব্যবধান দেখা যায় সেসম্পর্কে লিখতে বলেন। তাই কিছু লেখা। এখানে অরগাজম গ্যাপের পেছনে কি কি সোশ্যাল ফ্যাক্টর কাজ করে, বা অরগাজম গ্যাপের পেছনে কী কী বিষয় দায়ী তাই তুলে ধরার একটা প্রয়াস নিয়েছি... আগেই বলে রাখছি, ব্যস্ত বলে দ্রুতগতিতে লিখে গেছি, রিচেক করারও সময় হয় নি...
কাল Soma Santra দির থ্রেডটায় একটা কমেন্ট করেছিলাম, সেখানে Ahmad Mustafa আমাকে অরগাজম গ্যাপ বা পুরুষ ও নারীর অর্গাজমের মধ্যে যে বড় ব্যবধান দেখা যায় সেসম্পর্কে লিখতে বলেন। তাই কিছু লেখা। এখানে অরগাজম গ্যাপের পেছনে কি কি সোশ্যাল ফ্যাক্টর কাজ করে, বা অরগাজম গ্যাপের পেছনে কী কী বিষয় দায়ী তাই তুলে ধরার একটা প্রয়াস নিয়েছি... আগেই বলে রাখছি, ব্যস্ত বলে দ্রুতগতিতে লিখে গেছি, রিচেক করারও সময় হয় নি...
নারী পুরুষ সেক্সুয়ালিটিতে বায়োলজিকাল ডিফারেন্সটা একটা বড় ভূমিকা রাখলেও
অরগাজমের ইনিকুয়ালিটি বা অরগাজম গ্যাপের প্রায় পুরোটাই সামাজিক। গবেষণায়
দেখা গেছে মাত্র ৫৭ শতাংশ নারী তাদের সমস্ত বা বেশিরভাগ ইন্টারকোর্সে
অরগাজম লাভ করেছেন, এবং প্রতি তিন জন পুরুষের অনুপাতে মাত্র একজন নারী
অরগাজম লাভ করে।
http://www.cosmopolitan.com/…/n…/a37812/cosmo-orgasm-survey/
অরগাজম গ্যাপের পেছনে অনেকগুলো সোশ্যাল ফ্যাক্টর কাজ করে, যেমন:
১। নারীকে কম সেক্সুয়াল হিসেবে বিশ্বাস করা হয়:
প্রচলিত বিশ্বাস হল নারীরা সেক্স বা যৌনতাকে তেমন কেয়ার করে না। তারা এটাকে হয়তো এনজয় করে কিন্তু যৌনতার চেয়ে তার কাছে কমিটমেন্ট, ভ্যালিডেশন, ফাইনানশিয়াল সাপোর্ট এগুলো বেশি জরুরি হয়। যদি এগুলোর কোনটা পার্টনারের মধ্যে থাকে তাহলে সেক্স বা অর্গাজম নিয়ে নারীর না ভাবলেও চলে। কিন্তু গবেষণা বলে নারীরাও পুরুষের মতই যৌনতাকে এনজয় করে এবং চায়।
http://www.smh.com.au/…/women-think-about-sex-more-than-men…
সমাজ নারীর সেক্সুয়াল ডিজায়ারকে কেয়ার করে না বলে এই প্রভাব নারীদের মধ্যেও পড়ে আর তারাও ছোটবেলা থেকে তাদের সেক্সুয়াল ডিজায়ারকে নেগলেক্ট করতে শেখে।
২। পর্নোগ্রাফি পুরুষের প্লেজারকে প্রিভিলেজ করে:
বেশিরভাগ পর্ন ভিডিওতে পুরুষের অরগাজমকে ফোকাস করা হয়। দেখা যায় পুরুষের অর্গাজম প্রাপ্তি বা বীর্যপাত বা ইজাক্যুলেশন হয়ে গেলেই ভিডিওটির সমাপ্তি ঘটে। নারীর অর্গাজম এগুলোতে অপ্রয়োজনীয়। আর যদিওবা উইমেন ফোকাসড অর্গাজম দেখানো হয় তাহলেও তা পুরুষের প্লেজারের জন্য নিছক ইনসিডেন্টাল ইভেন্ট। তার উপর পর্ন সিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মেইনস্ট্রিমগুলো ব্লোজব ছাড়া ইনকমপ্লিট যেখানে কানিলিংগাস খুব একটা কমন না। এগুলোর মধ্য দিয়ে একটাই মেসেজ দেয়া হয়, তা হল পুরুষের অরগাজমটা ইমপেরেটিভ যেখানে নারীর অরগাজম তেমন ইম্পরটেন্ট না, হলে এটা একটা এডেড বোনাস। (ফেমিনিস্ট পর্নোগ্রাফিতে পুরুষের সাথে নারীর অরগাজমকেও ফোকাস করা হয়)।
৩। ‘ব্লু বল’ মিথ (blue ball myth):
আরবান ডিকশনারি অনুযায়ী ব্লু বল অর্থ হল যৌনতার অভাব, অসম্পূর্ণ ব্লোজব বা ইরেকশনের পরেও বীর্যপাত না করার কারণে বা অ-বীর্যপাতের কারণে তার অণ্ডকোষে ব্যাথা... ভাসোকনজেশনের কারণে জেনিটালে ব্লাড ফ্লো বাড়ায় নারী পুরুষ উভয়েরই হালকা ব্যাথা হতে পারে, কিন্তু ব্লু বল সেটাকে মিন করছে না। পুরুষেরা তাদের সেক্সুয়াল ফ্রাস্ট্রেশনের কারণে পার্টনারকে ব্লু বলের অযুহাত দেয় যেন এটা থেকে তাকে রিলিফ দেয়া নারীর দায়িত্ব। যদিও অনেক নারী জানেন পুরুষের বিনা অর্গাজমের ছাড়া ইরেকশন কোন সমস্যা নেই, তবুও ইরেকশনের পরও পুরুষকে অরগাজম না দেয়াকে অনেক নারী দোষ বলে মনে করে। আর অন্যদিকে পুরুষের নারীকে প্লেজার দান করার কোন প্রচেষ্টার অভাব দেখা যায়। এটাও অরগাজম গ্যাপের একটা অন্যতম কারণ।
৪। মিডিয়াতে নারীর চেয়ে পুরুষকে প্লিজ করার ইনফো বেশি থাকে:
মেইনস্ট্রিম ম্যাগাজিনগুলোর সেক্স আর্টিকেলগুলোতে পুরুষের প্লেজারকেই ফোকাস করা হয়। নারীদের জন্য লেখা আর্টিকেলগুলোতে দেখা যায় কিভাবে পুরুষকে সন্তুষ্ট করা হবে, এদিকে পুরুষদের জন্য লেখা আর্টিকেলে নারীদের অরগাজমকে তেমন ফোকাস করা হয় না। প্লেবয়, কসমোপলিটানের মত জনপ্রিয় ম্যাগাজিনে দেখা যায় বেশিরভাগই পুরুষের প্লেজারকেই ফোকাস করে। একটা সারভেতে দেখা যায় নারী ও পুরুষের একতা বড় অংশ ছবিতে ক্লিটোরিসকে আইডেন্টিফাই করতে পারে না। এটা পপুলার মিডিয়াগুলোতে নারীর অরগাজমকে ফোকাস না করার ফল। মানুষের একটা বড় অংশই ভালভা ও ভাজাইনার ব্যাপারে অন্ধকারে থাকে।
৫। হুক-আপ কালচার পুরুষের প্লেজারকে প্রিভিলেজ করে
হুক-আপ কালচার বলতে প্রোমিসকুইটি সেক্স বা ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড বা ভালবাসা ছাড়া ক্যাজুয়াল সেক্স কালচার বোঝায়। দেখা যায় নারী পার্টনাররা এক্ষেত্রে সঙ্গীদের যথাসর্বশ্ব চেষ্টা করে, কিন্তু যখন তাদের নিজেদের অরগাজমের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয় তখন ভিন্ন এক্সপেক্টেশন দেখা যায়। গবেষণায় দেখা যায় প্রথম হুকাপ সেক্সে পুরুষ ও নারীর অর্গাজমের অনুপাত ৩.১:১। পরবর্তীতে অবশ্ ব্যবধান কমতে থাকে। যাই হোক, কোন একটা কারণে এই কালচার মেনে নিয়েছে যে নারীর অরগাজম অপশনাল। প্রথম জীবনের হুকাপ কালচার ফলো করা নারী পুরুষও পরবর্তী বৈবাহিক জীবনে গিয়ে নারীর অরগাজমকে অপশনাল মনে করে।
৬। সেক্স এডুকেশনে প্লেজার, বিশেষ করে ফিমেল প্লেজার শেখানো হয় না:
প্রাতিষ্ঠানিক সেক্স এড হোক বা সিনিয়রদের কাছেই সেক্স এড নেয়া হোক একটা ট্রেন্ড কম বেশি সব জায়গায় দেখা যায়। তাহল নারীদেরকে মূলত মেনস্ট্রুয়েশন সাইকেল, গর্ভাবস্থার ব্যাপারে শিক্ষা দেয়া হয় আর পুরুষকে ইরেকশন, ইজাক্যুলেশন বা বীর্যপাত, ওয়েট ড্রিম এসব ব্যাপারে শেখানো হয়। অর্থাৎ যেখানে পুরুষকে তাদের অরগাজম সংক্রান্ত শিক্ষা দেয়া হচ্ছে সেখানে নারীকে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে নারীকে ডিরেক্টলি এবং মেয়ারলি শেখানো হচ্ছে সন্তানধারণ, সন্তান জন্মপ্রক্রিয়া ও সন্তান জন্মদানের ব্যাপারে।
পরবর্তীতে কোথাও যদি জন্মনিরোধক বা কন্ডোমের ব্যাবহার শেখানো হয়, কন্ডোম লাগানো হোক, ইন্টারকোর্স করা হোক, ইজাক্যুলেশন হোক, এরপর কন্ডোম খুলে ফেলা হোক আর সেটা ফেলে দেয়া হোক... মোটামুটি এটাই হল বর্তমানে বিল্ট ইন সেফ সেক্স লেসন।
কোথাও শেখানো হয় না যে “নারীদের যখন অরগাজমের পর বা অন্যান্য কারণে ইন্টারকোর্স করতে আর ভাল লাগবে না করবে তখন তা বন্ধ করতে হবে” বা “সঙ্গীর কখনও ইন্টারকোর্স বন্ধকরার প্রয়োজন হতে পারে” (কারণ বেশিরভাগ পর্ন ভিডিওর মত সব নারীরই মাল্টিপল অরগাজম হয় না, পুরুষের বীর্যপাতের পর যেমন রিফ্র্যাক্টরি পিরিয়ড শুরু হয়, অনেক নারীদের বেলাতেও এমন হয় যখন কমফর্টেবলি ইন্টারকোর্স আর সম্ভব হয় না)। সেক্স সম্পর্কে যাবতীয় সুস্থ অসুস্থ শিক্ষাই পুরুষের অর্গাজমকেন্দ্রিক আর এখানে ইন্টারকোর্সের সমাপ্তি পুরুষের বীর্যপাতের পরেই...
৭। নারীদের আত্মমূল্যায়নকারী চিন্তা তাদের এরাউজালে বিঘ্ন ঘটায়:
মেইনস্ট্রিম পর্নে ও অন্যান্য মিডিয়ার কারণে নারীরা নিজেকে ইন্টারকোর্সের সময় নিজেদের পিকচারিং করতে শেখে। তারা অনেক সময়ই ভাবে “এই এংগেল থেকে আমার পেটকে কিরকম দেখা যাবে”, “এই এক্সপ্রেশনে আমার ফেসকে সেক্সি নাকি সিলি লাগবে” ইত্যাদি... আর এরকম চিন্তাগুলো দেখা যায় নারীকে ইন্টারকোর্সের সময়েও ডিস্ট্রাক্ট করে। কসমোতে অরগাজম নিয়ে একটা সার্ভে শেয়ার করা হয় যেখানে দেখা যায় ৩২ শতাংশ নারীই বলেছেন তারা যখন অরগাজম অনুভব করেন না, তখন এর কারণের মূলে থাকে তাদের কিরকম দেখতে লাগছে এই সংক্রান্ত চিন্তা।
http://www.cosmopolitan.com/…/n…/a37812/cosmo-orgasm-survey/
এছাড়া অরগাজম নিজেই পারফরমেন্স এনজাইটির একটা কারণ হতে পারে। পর্ন মিডিয়ায় নারীর অরগাজমকে অনেক বেশি ড্রামাটাইজ করা হয় এবং সেখানে মোনিং (moan) এবং ফেশিয়াল এক্সপ্রেশনকে এক্সাজারেট করে দেখানো হয়। এরকম অরগাজম না পাবার ভয় বরং তাদের অরগাজম প্রাপ্তির বেলাতেই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এই প্রেশারের কারণে অনেক নারীই অরগাজম না হওয়া সত্ত্বেও ফেইক অরগাজম দেখায়।
উইমেন ম্যাগাজিনগুলোর আর্টিকেলগুলো অনেকটা এরকম হতে দেখা যায়... “কি করে আরো বেশি আবেদনময়ী হবেন”, “কি করলে নিজেকে আরো বেশি সুন্দর লাগবে”... ইত্যাদি। এখানে “আরও” শব্দটি দ্বারা ইমপ্লাই করা হয় যে নারী কখনই সম্পূর্ণভাবে আবেদনময়ী নয়, সুন্দরী নয়। এসব আর্টিকেলে “আপনি যথেষ্ট সুন্দরী নন, আবেদনময়ী নন” এটা তো প্রমাণ করে ছাড়া হয়ই, সেই সাথে এর সল্যুশন হিসেবে কিছু প্রি-বেডরুম ওয়ার্কআউট রুটিন, সেলফ ট্যানার এপলিকেশন টিপস জুড়ে দেয়া হয়। এগুলোতে সমস্ত ফোকাস পার্টনারের প্লেজারের উপরেই যায় আর সাথে সাথে পাঠক নারীরও কনফিডেন্স নষ্ট করে দিয়ে একটা দুশ্চিন্তা তৈরি করে। আর ইন্টারকোর্সের সময় নিজের পারফেকশন নিয়ে ভাবার ফলে অরগাজম প্রাপ্তিও অনেক কঠিন হয়ে যায়।
৮। সেক্সুয়াল ট্রমা এরাউজাল ও অরগাজমের বাঁধার কারণ হতে পারে
নারীদের জীবনে সেক্সুয়াল ট্রমার ঘটনার উদাহরণ কম নয়। একটা গবেষণায় দেখা গেছে ছয়জনের মধ্যে একজন নারী সেক্সুয়াল এসল্ট, এটেমটেড রেপ বা কমপ্লিট রেপের শিকার হয়।
https://rainn.org/get-inf…/statistics/sexual-assault-victims
সেক্স থেরাপিস্ট ভেনেসা মেরিনের মতে, এই ট্রমা একজনের সম্পূর্ণ যৌনজীবন জুড়েই থাকতে পারে। তিনি বলেন, সেক্সুয়াল এসল্টের শিকার হয়েছেন এমন অনেক নারীই ইন্টারকোর্সের সময় একধরণের ডিসোসিয়েশন বোধ করেন। মেরিন রিকমেন্ড করেন, নারীকে বারবার মনে করতে যে সে অপরাধীর সাথে নয় তার পার্টনারের সাথে আছে। অপরাধীর কথা মনে আসলে ট্রমা রিলেটেড প্রবলেম আরও বাড়ে। তার কথায়, অবশ্যই ব্রেইন জানে যে তারা কারা, কিন্তু এরকম প্র্যাক্টিস করলে তার মনের সাবকনশাস পার্ট রিলাক্স করতে শুরু করবে।
আবার অনেক সময় ইন্টারকোর্সের সময় নারীর লজ্জা, অপরাধবোধের চিন্তা তার এনরগাজমিয়ার কারণ হতে পারে।
৯। নারীরা পুরুষের তুলনায় অধিক এন্টিডিপ্রেসেন্ট নেন:
অনেক এন্টিডিপ্রেসেন্ট এনরগাজমিয়া (অরগাজম না হওয়া) এর কারণ হয়ে থাকে। এখন এন্টিডিপ্রেসেন্ট এর এনরগাজমিয়া ঘটানোর সাইড এফেক্ট জেন্ডার স্পেসিফিক বা বিভিন্ন জেন্ডারে বিভিন্ন নয়, কিন্তু দেখা যায় এই এন্টিডিপ্রেসেন্ট নিজেই জেন্ডার স্পেসিফিক! অর্থাৎ নারীদেরকেই পুরুষের তুলনায় বেশি পরিমাণে এন্টিডিপ্রেসেন্ট নিতে দেখা যায়। একটি গবেষণায় উঠে আসে প্রতি চারজনের একজন নারী মেন্টাল কন্ডিশনের জন্যওষুধ নিয়ে থাকেন আর এদের মধ্যে বেশিরভাগই ওষুধ নেন এনজাইটি ও ডিপ্রেশনের জন্য।
http://www.huffingtonpost.com/…/women-and-prescription-drug…
আর এই সমস্যাগুলোর জন্য ডাক্তাররাও এন্টিডিপ্রেসেন্টই রিকমেন্ড করেন। যাই হোক, প্রশ্ন হচ্ছে নারীদের বেলাতেই এত ডিপ্রেশনেবং এনজাইটি দেখা যায় কেন। কেন এর উত্তর ব্যাখ্যা করার জন্য অনেক থিওরিই আছে, কিন্তু পুরুষ ও নারীর মধ্যে এনজাইটির এই ডিফারেন্স এর একটি পসিবল সোর্স হচ্ছে সোসাইটাল মিসোজিনি। ফেমিনিস্ট একটিভিস্ট এলি বোঘান বলেন, নারীদের মধ্যে যেসব স্ট্রেসর কাজ করে সেগুলোর মধ্যে একটি বড় অংশই সমাজ কর্তৃক আরোপিত যা তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট উপায়ে কাজ করতে এবং সাজতে বলে...
এছাড়া দেখা যায় নারীরা থেরাপিও বেশি নেয় পুরুষের চেয়ে। এর কারণ হল সমাজের আরোপিত ম্যাসকুলিনিটির বিষাক্ত স্ট্যান্ডার্ড পুরুষকে নিজেদের আবেগ সম্পর্কে আলোচনা করতে বাঁধা দেয়।
http://www.apa.org/monitor/jun05/helping.aspx
যাই হোক, এটা একটা কেস যেখানে অরগাজম গ্যাপকে বায়োলজিকাল ডিফারেন্সের সাথে রিলেট করা যায়। এখানে বায়োলজিকাল ডিফারেন্স থাকলেও এই ডিফারেন্স এর সোর্সটা কিন্তু সোসাইটাল।
১০। নারীরা কী চায় তা জিজ্ঞেস করতে তারা ডিসকারেজড হয়
নারীদেরকে অন্যদের ইচ্ছায় মানিয়ে নিতে শেখানো হয়, তাদেরকে পোলাইট, প্লিজেন্ট ও গ্রেটফুল হতে শেখানো হয় আর বেশি চাইতে নিষেধ করা হয় সে খাবার হোক, পেমেন্ট হোক বা সেক্সুয়াল প্লেজার। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, একজন নারী বলেন, তার অরগাজম রিকুয়েস্ট করার অধিকার নেই। এতেতার কাছে চাচ্ছে না। আর এটা চাওয়ায় তার মাঝে খারাপ অনুভূতি তৈরি হয়...
http://journals.sagepub.com/doi/abs/10.1177/0003122412445802
যে ভয়টা নারী ওয়ার্ক মিটিং-এ কথা বলা, স্যালারি নেগোসিয়েশনের সময় বলতে গিয়ে পান, একই ভয় তিনি বিছানায় কথা বলতেও পান। যাইহোক, কোওয়ার্কার, পার্টনারদের একটা দায়িত্ব-কর্তব্য থাকে তাদের এই ভয় দূর করার, কিন্তু এক্ষেত্রেও এর একটা অভাব দেখা যায়।
১১। সেক্স বা ইন্টারকোর্সের প্রচলিত সংজ্ঞা নারীর অরগাজমের জন্য অপটিমাল নয়:
“সেক্স” বলতে বেশিরভাগ লোকই পেনিস-ইন-ভাজাইনা ইন্টারকোর্স বুঝে থাকেন। কিন্তু তাও অনেকের কাছে এর ডেফিনিশন অনেক রকম। অনেকে অরাল সেক্সকে সেক্স মনে করে থাকেন কিন্তু তাও ওরাল সেক্সকে সমাজ সেক্স এর নর্মে ফেলেনা, যেমন কেউ যদি ভারজিনিটি হারানোর কথা মেনশন করে তাহলে বেশিরভাগের মনে পেনিট্রেটিভ সেক্সের কথা প্রথমে আসবে। আর সেক্সের এই প্রচলিত ডেফিনিশনটাই নারীর অর্গাজন না পাওয়ার একটা কারণ হতে পারে। একটি সারভেতে দেখা যায়, ২০ শতাংশ নারী বলেন ইন্টারকোর্সের সময় তাদের কদাচিত অরগাজম হয়েছিল বা কখনই হয় নি, কেবল ২৫ পারসেন্ট নারী বলেন তাদের অরগাজম হয়েছিল। ৩৮ পারসেন্ট নারী বলেন, ইন্টারকোর্সের সময় অরগাজম না আসার মূল কারণ হল যথেষ্ট ক্লিটোরাল স্টিমুলেশন না হওয়া।
https://www.psychologytoday.com/…/the-most-important-sexual…
যেহেতু পেনিট্রেটিভ সেক্স সরাসরি ক্লিটোরিসকে স্টিমুলেট করে না তাই এটা নারীদের অরগাজমের জন্য অপটিমাল হতে পারে না। তাই ওরাল সেক্স বা অন্য উপায়ে ক্লিটোরাল স্টিমুলেশনের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এসব সেক্সের মর্যাদাই পায় না। বেশিরভাগের কাছে এগুলো পরিচিত হয় ফোরপ্লে, ওয়ার্ম আপ বা এক্সট্রা হিসেবে। যতদিন এগুলো এগুলোকে অদরকারী ও এক্সট্রা বলে মনে করা হবে ততদিন নারীর প্লেজারও ডিপ্রায়োরিটাইজড হয়ে থাকবে।
১২। অনেকে মনে করেন অরগাজম গ্যাপ বায়োলজিকাল:
সমাজে একটা বিশেষ ধারণা কাজ করে নারীদেহ নিয়ে। এটা হচ্ছে, “নারীর দেহ একটি অসম্ভব ধাঁধাঁ”। ধাঁধাঁ যদিও বা হয়, পুরুষরা এই ধাঁধাঁকে বায়োলজিকাল হিসেবে মেনে নিয়ে কখনও সল্ভ করারও চেষ্টা করেন না। আবার নারীরাও এটা সল্ভ করার চেষ্টা করেন না যাদেরকে শেখানো হয়েছে যে তাদের প্লেজার আসলে ইনেকসেসিবল। যাই হোক, অরগাজম গ্যাপের মূলে যে মূলত সোশ্যাল ফ্যাক্টরই কাজ করে, বায়োলজি নয় এটা বোঝা যায় যখন দেখা যায় লেসবিয়ান সেক্সে নারীর অরগাজম এর হার নারী-পুরুষ সেক্সে নারীদের অরগাজমের তুলনায় অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে ৭৪.৭ পারসেন্ট ক্ষেত্রে নারী লেসবিয়ান সেক্সে অরগাজম লাভ করে থাকে যেখানে বিপরীত লিংগের সেক্সে এই হার ৫৭ পারসেন্ট।
http://www.huffingtonpost.com/…/lesbians-more-orgasms-strai…
http://www.cosmopolitan.com/…/n…/a37812/cosmo-orgasm-survey/
অরগাজম গ্যাপের পেছনে অনেকগুলো সোশ্যাল ফ্যাক্টর কাজ করে, যেমন:
১। নারীকে কম সেক্সুয়াল হিসেবে বিশ্বাস করা হয়:
প্রচলিত বিশ্বাস হল নারীরা সেক্স বা যৌনতাকে তেমন কেয়ার করে না। তারা এটাকে হয়তো এনজয় করে কিন্তু যৌনতার চেয়ে তার কাছে কমিটমেন্ট, ভ্যালিডেশন, ফাইনানশিয়াল সাপোর্ট এগুলো বেশি জরুরি হয়। যদি এগুলোর কোনটা পার্টনারের মধ্যে থাকে তাহলে সেক্স বা অর্গাজম নিয়ে নারীর না ভাবলেও চলে। কিন্তু গবেষণা বলে নারীরাও পুরুষের মতই যৌনতাকে এনজয় করে এবং চায়।
http://www.smh.com.au/…/women-think-about-sex-more-than-men…
সমাজ নারীর সেক্সুয়াল ডিজায়ারকে কেয়ার করে না বলে এই প্রভাব নারীদের মধ্যেও পড়ে আর তারাও ছোটবেলা থেকে তাদের সেক্সুয়াল ডিজায়ারকে নেগলেক্ট করতে শেখে।
২। পর্নোগ্রাফি পুরুষের প্লেজারকে প্রিভিলেজ করে:
বেশিরভাগ পর্ন ভিডিওতে পুরুষের অরগাজমকে ফোকাস করা হয়। দেখা যায় পুরুষের অর্গাজম প্রাপ্তি বা বীর্যপাত বা ইজাক্যুলেশন হয়ে গেলেই ভিডিওটির সমাপ্তি ঘটে। নারীর অর্গাজম এগুলোতে অপ্রয়োজনীয়। আর যদিওবা উইমেন ফোকাসড অর্গাজম দেখানো হয় তাহলেও তা পুরুষের প্লেজারের জন্য নিছক ইনসিডেন্টাল ইভেন্ট। তার উপর পর্ন সিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মেইনস্ট্রিমগুলো ব্লোজব ছাড়া ইনকমপ্লিট যেখানে কানিলিংগাস খুব একটা কমন না। এগুলোর মধ্য দিয়ে একটাই মেসেজ দেয়া হয়, তা হল পুরুষের অরগাজমটা ইমপেরেটিভ যেখানে নারীর অরগাজম তেমন ইম্পরটেন্ট না, হলে এটা একটা এডেড বোনাস। (ফেমিনিস্ট পর্নোগ্রাফিতে পুরুষের সাথে নারীর অরগাজমকেও ফোকাস করা হয়)।
৩। ‘ব্লু বল’ মিথ (blue ball myth):
আরবান ডিকশনারি অনুযায়ী ব্লু বল অর্থ হল যৌনতার অভাব, অসম্পূর্ণ ব্লোজব বা ইরেকশনের পরেও বীর্যপাত না করার কারণে বা অ-বীর্যপাতের কারণে তার অণ্ডকোষে ব্যাথা... ভাসোকনজেশনের কারণে জেনিটালে ব্লাড ফ্লো বাড়ায় নারী পুরুষ উভয়েরই হালকা ব্যাথা হতে পারে, কিন্তু ব্লু বল সেটাকে মিন করছে না। পুরুষেরা তাদের সেক্সুয়াল ফ্রাস্ট্রেশনের কারণে পার্টনারকে ব্লু বলের অযুহাত দেয় যেন এটা থেকে তাকে রিলিফ দেয়া নারীর দায়িত্ব। যদিও অনেক নারী জানেন পুরুষের বিনা অর্গাজমের ছাড়া ইরেকশন কোন সমস্যা নেই, তবুও ইরেকশনের পরও পুরুষকে অরগাজম না দেয়াকে অনেক নারী দোষ বলে মনে করে। আর অন্যদিকে পুরুষের নারীকে প্লেজার দান করার কোন প্রচেষ্টার অভাব দেখা যায়। এটাও অরগাজম গ্যাপের একটা অন্যতম কারণ।
৪। মিডিয়াতে নারীর চেয়ে পুরুষকে প্লিজ করার ইনফো বেশি থাকে:
মেইনস্ট্রিম ম্যাগাজিনগুলোর সেক্স আর্টিকেলগুলোতে পুরুষের প্লেজারকেই ফোকাস করা হয়। নারীদের জন্য লেখা আর্টিকেলগুলোতে দেখা যায় কিভাবে পুরুষকে সন্তুষ্ট করা হবে, এদিকে পুরুষদের জন্য লেখা আর্টিকেলে নারীদের অরগাজমকে তেমন ফোকাস করা হয় না। প্লেবয়, কসমোপলিটানের মত জনপ্রিয় ম্যাগাজিনে দেখা যায় বেশিরভাগই পুরুষের প্লেজারকেই ফোকাস করে। একটা সারভেতে দেখা যায় নারী ও পুরুষের একতা বড় অংশ ছবিতে ক্লিটোরিসকে আইডেন্টিফাই করতে পারে না। এটা পপুলার মিডিয়াগুলোতে নারীর অরগাজমকে ফোকাস না করার ফল। মানুষের একটা বড় অংশই ভালভা ও ভাজাইনার ব্যাপারে অন্ধকারে থাকে।
৫। হুক-আপ কালচার পুরুষের প্লেজারকে প্রিভিলেজ করে
হুক-আপ কালচার বলতে প্রোমিসকুইটি সেক্স বা ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড বা ভালবাসা ছাড়া ক্যাজুয়াল সেক্স কালচার বোঝায়। দেখা যায় নারী পার্টনাররা এক্ষেত্রে সঙ্গীদের যথাসর্বশ্ব চেষ্টা করে, কিন্তু যখন তাদের নিজেদের অরগাজমের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয় তখন ভিন্ন এক্সপেক্টেশন দেখা যায়। গবেষণায় দেখা যায় প্রথম হুকাপ সেক্সে পুরুষ ও নারীর অর্গাজমের অনুপাত ৩.১:১। পরবর্তীতে অবশ্ ব্যবধান কমতে থাকে। যাই হোক, কোন একটা কারণে এই কালচার মেনে নিয়েছে যে নারীর অরগাজম অপশনাল। প্রথম জীবনের হুকাপ কালচার ফলো করা নারী পুরুষও পরবর্তী বৈবাহিক জীবনে গিয়ে নারীর অরগাজমকে অপশনাল মনে করে।
৬। সেক্স এডুকেশনে প্লেজার, বিশেষ করে ফিমেল প্লেজার শেখানো হয় না:
প্রাতিষ্ঠানিক সেক্স এড হোক বা সিনিয়রদের কাছেই সেক্স এড নেয়া হোক একটা ট্রেন্ড কম বেশি সব জায়গায় দেখা যায়। তাহল নারীদেরকে মূলত মেনস্ট্রুয়েশন সাইকেল, গর্ভাবস্থার ব্যাপারে শিক্ষা দেয়া হয় আর পুরুষকে ইরেকশন, ইজাক্যুলেশন বা বীর্যপাত, ওয়েট ড্রিম এসব ব্যাপারে শেখানো হয়। অর্থাৎ যেখানে পুরুষকে তাদের অরগাজম সংক্রান্ত শিক্ষা দেয়া হচ্ছে সেখানে নারীকে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে নারীকে ডিরেক্টলি এবং মেয়ারলি শেখানো হচ্ছে সন্তানধারণ, সন্তান জন্মপ্রক্রিয়া ও সন্তান জন্মদানের ব্যাপারে।
পরবর্তীতে কোথাও যদি জন্মনিরোধক বা কন্ডোমের ব্যাবহার শেখানো হয়, কন্ডোম লাগানো হোক, ইন্টারকোর্স করা হোক, ইজাক্যুলেশন হোক, এরপর কন্ডোম খুলে ফেলা হোক আর সেটা ফেলে দেয়া হোক... মোটামুটি এটাই হল বর্তমানে বিল্ট ইন সেফ সেক্স লেসন।
কোথাও শেখানো হয় না যে “নারীদের যখন অরগাজমের পর বা অন্যান্য কারণে ইন্টারকোর্স করতে আর ভাল লাগবে না করবে তখন তা বন্ধ করতে হবে” বা “সঙ্গীর কখনও ইন্টারকোর্স বন্ধকরার প্রয়োজন হতে পারে” (কারণ বেশিরভাগ পর্ন ভিডিওর মত সব নারীরই মাল্টিপল অরগাজম হয় না, পুরুষের বীর্যপাতের পর যেমন রিফ্র্যাক্টরি পিরিয়ড শুরু হয়, অনেক নারীদের বেলাতেও এমন হয় যখন কমফর্টেবলি ইন্টারকোর্স আর সম্ভব হয় না)। সেক্স সম্পর্কে যাবতীয় সুস্থ অসুস্থ শিক্ষাই পুরুষের অর্গাজমকেন্দ্রিক আর এখানে ইন্টারকোর্সের সমাপ্তি পুরুষের বীর্যপাতের পরেই...
৭। নারীদের আত্মমূল্যায়নকারী চিন্তা তাদের এরাউজালে বিঘ্ন ঘটায়:
মেইনস্ট্রিম পর্নে ও অন্যান্য মিডিয়ার কারণে নারীরা নিজেকে ইন্টারকোর্সের সময় নিজেদের পিকচারিং করতে শেখে। তারা অনেক সময়ই ভাবে “এই এংগেল থেকে আমার পেটকে কিরকম দেখা যাবে”, “এই এক্সপ্রেশনে আমার ফেসকে সেক্সি নাকি সিলি লাগবে” ইত্যাদি... আর এরকম চিন্তাগুলো দেখা যায় নারীকে ইন্টারকোর্সের সময়েও ডিস্ট্রাক্ট করে। কসমোতে অরগাজম নিয়ে একটা সার্ভে শেয়ার করা হয় যেখানে দেখা যায় ৩২ শতাংশ নারীই বলেছেন তারা যখন অরগাজম অনুভব করেন না, তখন এর কারণের মূলে থাকে তাদের কিরকম দেখতে লাগছে এই সংক্রান্ত চিন্তা।
http://www.cosmopolitan.com/…/n…/a37812/cosmo-orgasm-survey/
এছাড়া অরগাজম নিজেই পারফরমেন্স এনজাইটির একটা কারণ হতে পারে। পর্ন মিডিয়ায় নারীর অরগাজমকে অনেক বেশি ড্রামাটাইজ করা হয় এবং সেখানে মোনিং (moan) এবং ফেশিয়াল এক্সপ্রেশনকে এক্সাজারেট করে দেখানো হয়। এরকম অরগাজম না পাবার ভয় বরং তাদের অরগাজম প্রাপ্তির বেলাতেই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এই প্রেশারের কারণে অনেক নারীই অরগাজম না হওয়া সত্ত্বেও ফেইক অরগাজম দেখায়।
উইমেন ম্যাগাজিনগুলোর আর্টিকেলগুলো অনেকটা এরকম হতে দেখা যায়... “কি করে আরো বেশি আবেদনময়ী হবেন”, “কি করলে নিজেকে আরো বেশি সুন্দর লাগবে”... ইত্যাদি। এখানে “আরও” শব্দটি দ্বারা ইমপ্লাই করা হয় যে নারী কখনই সম্পূর্ণভাবে আবেদনময়ী নয়, সুন্দরী নয়। এসব আর্টিকেলে “আপনি যথেষ্ট সুন্দরী নন, আবেদনময়ী নন” এটা তো প্রমাণ করে ছাড়া হয়ই, সেই সাথে এর সল্যুশন হিসেবে কিছু প্রি-বেডরুম ওয়ার্কআউট রুটিন, সেলফ ট্যানার এপলিকেশন টিপস জুড়ে দেয়া হয়। এগুলোতে সমস্ত ফোকাস পার্টনারের প্লেজারের উপরেই যায় আর সাথে সাথে পাঠক নারীরও কনফিডেন্স নষ্ট করে দিয়ে একটা দুশ্চিন্তা তৈরি করে। আর ইন্টারকোর্সের সময় নিজের পারফেকশন নিয়ে ভাবার ফলে অরগাজম প্রাপ্তিও অনেক কঠিন হয়ে যায়।
৮। সেক্সুয়াল ট্রমা এরাউজাল ও অরগাজমের বাঁধার কারণ হতে পারে
নারীদের জীবনে সেক্সুয়াল ট্রমার ঘটনার উদাহরণ কম নয়। একটা গবেষণায় দেখা গেছে ছয়জনের মধ্যে একজন নারী সেক্সুয়াল এসল্ট, এটেমটেড রেপ বা কমপ্লিট রেপের শিকার হয়।
https://rainn.org/get-inf…/statistics/sexual-assault-victims
সেক্স থেরাপিস্ট ভেনেসা মেরিনের মতে, এই ট্রমা একজনের সম্পূর্ণ যৌনজীবন জুড়েই থাকতে পারে। তিনি বলেন, সেক্সুয়াল এসল্টের শিকার হয়েছেন এমন অনেক নারীই ইন্টারকোর্সের সময় একধরণের ডিসোসিয়েশন বোধ করেন। মেরিন রিকমেন্ড করেন, নারীকে বারবার মনে করতে যে সে অপরাধীর সাথে নয় তার পার্টনারের সাথে আছে। অপরাধীর কথা মনে আসলে ট্রমা রিলেটেড প্রবলেম আরও বাড়ে। তার কথায়, অবশ্যই ব্রেইন জানে যে তারা কারা, কিন্তু এরকম প্র্যাক্টিস করলে তার মনের সাবকনশাস পার্ট রিলাক্স করতে শুরু করবে।
আবার অনেক সময় ইন্টারকোর্সের সময় নারীর লজ্জা, অপরাধবোধের চিন্তা তার এনরগাজমিয়ার কারণ হতে পারে।
৯। নারীরা পুরুষের তুলনায় অধিক এন্টিডিপ্রেসেন্ট নেন:
অনেক এন্টিডিপ্রেসেন্ট এনরগাজমিয়া (অরগাজম না হওয়া) এর কারণ হয়ে থাকে। এখন এন্টিডিপ্রেসেন্ট এর এনরগাজমিয়া ঘটানোর সাইড এফেক্ট জেন্ডার স্পেসিফিক বা বিভিন্ন জেন্ডারে বিভিন্ন নয়, কিন্তু দেখা যায় এই এন্টিডিপ্রেসেন্ট নিজেই জেন্ডার স্পেসিফিক! অর্থাৎ নারীদেরকেই পুরুষের তুলনায় বেশি পরিমাণে এন্টিডিপ্রেসেন্ট নিতে দেখা যায়। একটি গবেষণায় উঠে আসে প্রতি চারজনের একজন নারী মেন্টাল কন্ডিশনের জন্যওষুধ নিয়ে থাকেন আর এদের মধ্যে বেশিরভাগই ওষুধ নেন এনজাইটি ও ডিপ্রেশনের জন্য।
http://www.huffingtonpost.com/…/women-and-prescription-drug…
আর এই সমস্যাগুলোর জন্য ডাক্তাররাও এন্টিডিপ্রেসেন্টই রিকমেন্ড করেন। যাই হোক, প্রশ্ন হচ্ছে নারীদের বেলাতেই এত ডিপ্রেশনেবং এনজাইটি দেখা যায় কেন। কেন এর উত্তর ব্যাখ্যা করার জন্য অনেক থিওরিই আছে, কিন্তু পুরুষ ও নারীর মধ্যে এনজাইটির এই ডিফারেন্স এর একটি পসিবল সোর্স হচ্ছে সোসাইটাল মিসোজিনি। ফেমিনিস্ট একটিভিস্ট এলি বোঘান বলেন, নারীদের মধ্যে যেসব স্ট্রেসর কাজ করে সেগুলোর মধ্যে একটি বড় অংশই সমাজ কর্তৃক আরোপিত যা তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট উপায়ে কাজ করতে এবং সাজতে বলে...
এছাড়া দেখা যায় নারীরা থেরাপিও বেশি নেয় পুরুষের চেয়ে। এর কারণ হল সমাজের আরোপিত ম্যাসকুলিনিটির বিষাক্ত স্ট্যান্ডার্ড পুরুষকে নিজেদের আবেগ সম্পর্কে আলোচনা করতে বাঁধা দেয়।
http://www.apa.org/monitor/jun05/helping.aspx
যাই হোক, এটা একটা কেস যেখানে অরগাজম গ্যাপকে বায়োলজিকাল ডিফারেন্সের সাথে রিলেট করা যায়। এখানে বায়োলজিকাল ডিফারেন্স থাকলেও এই ডিফারেন্স এর সোর্সটা কিন্তু সোসাইটাল।
১০। নারীরা কী চায় তা জিজ্ঞেস করতে তারা ডিসকারেজড হয়
নারীদেরকে অন্যদের ইচ্ছায় মানিয়ে নিতে শেখানো হয়, তাদেরকে পোলাইট, প্লিজেন্ট ও গ্রেটফুল হতে শেখানো হয় আর বেশি চাইতে নিষেধ করা হয় সে খাবার হোক, পেমেন্ট হোক বা সেক্সুয়াল প্লেজার। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, একজন নারী বলেন, তার অরগাজম রিকুয়েস্ট করার অধিকার নেই। এতেতার কাছে চাচ্ছে না। আর এটা চাওয়ায় তার মাঝে খারাপ অনুভূতি তৈরি হয়...
http://journals.sagepub.com/doi/abs/10.1177/0003122412445802
যে ভয়টা নারী ওয়ার্ক মিটিং-এ কথা বলা, স্যালারি নেগোসিয়েশনের সময় বলতে গিয়ে পান, একই ভয় তিনি বিছানায় কথা বলতেও পান। যাইহোক, কোওয়ার্কার, পার্টনারদের একটা দায়িত্ব-কর্তব্য থাকে তাদের এই ভয় দূর করার, কিন্তু এক্ষেত্রেও এর একটা অভাব দেখা যায়।
১১। সেক্স বা ইন্টারকোর্সের প্রচলিত সংজ্ঞা নারীর অরগাজমের জন্য অপটিমাল নয়:
“সেক্স” বলতে বেশিরভাগ লোকই পেনিস-ইন-ভাজাইনা ইন্টারকোর্স বুঝে থাকেন। কিন্তু তাও অনেকের কাছে এর ডেফিনিশন অনেক রকম। অনেকে অরাল সেক্সকে সেক্স মনে করে থাকেন কিন্তু তাও ওরাল সেক্সকে সমাজ সেক্স এর নর্মে ফেলেনা, যেমন কেউ যদি ভারজিনিটি হারানোর কথা মেনশন করে তাহলে বেশিরভাগের মনে পেনিট্রেটিভ সেক্সের কথা প্রথমে আসবে। আর সেক্সের এই প্রচলিত ডেফিনিশনটাই নারীর অর্গাজন না পাওয়ার একটা কারণ হতে পারে। একটি সারভেতে দেখা যায়, ২০ শতাংশ নারী বলেন ইন্টারকোর্সের সময় তাদের কদাচিত অরগাজম হয়েছিল বা কখনই হয় নি, কেবল ২৫ পারসেন্ট নারী বলেন তাদের অরগাজম হয়েছিল। ৩৮ পারসেন্ট নারী বলেন, ইন্টারকোর্সের সময় অরগাজম না আসার মূল কারণ হল যথেষ্ট ক্লিটোরাল স্টিমুলেশন না হওয়া।
https://www.psychologytoday.com/…/the-most-important-sexual…
যেহেতু পেনিট্রেটিভ সেক্স সরাসরি ক্লিটোরিসকে স্টিমুলেট করে না তাই এটা নারীদের অরগাজমের জন্য অপটিমাল হতে পারে না। তাই ওরাল সেক্স বা অন্য উপায়ে ক্লিটোরাল স্টিমুলেশনের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এসব সেক্সের মর্যাদাই পায় না। বেশিরভাগের কাছে এগুলো পরিচিত হয় ফোরপ্লে, ওয়ার্ম আপ বা এক্সট্রা হিসেবে। যতদিন এগুলো এগুলোকে অদরকারী ও এক্সট্রা বলে মনে করা হবে ততদিন নারীর প্লেজারও ডিপ্রায়োরিটাইজড হয়ে থাকবে।
১২। অনেকে মনে করেন অরগাজম গ্যাপ বায়োলজিকাল:
সমাজে একটা বিশেষ ধারণা কাজ করে নারীদেহ নিয়ে। এটা হচ্ছে, “নারীর দেহ একটি অসম্ভব ধাঁধাঁ”। ধাঁধাঁ যদিও বা হয়, পুরুষরা এই ধাঁধাঁকে বায়োলজিকাল হিসেবে মেনে নিয়ে কখনও সল্ভ করারও চেষ্টা করেন না। আবার নারীরাও এটা সল্ভ করার চেষ্টা করেন না যাদেরকে শেখানো হয়েছে যে তাদের প্লেজার আসলে ইনেকসেসিবল। যাই হোক, অরগাজম গ্যাপের মূলে যে মূলত সোশ্যাল ফ্যাক্টরই কাজ করে, বায়োলজি নয় এটা বোঝা যায় যখন দেখা যায় লেসবিয়ান সেক্সে নারীর অরগাজম এর হার নারী-পুরুষ সেক্সে নারীদের অরগাজমের তুলনায় অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে ৭৪.৭ পারসেন্ট ক্ষেত্রে নারী লেসবিয়ান সেক্সে অরগাজম লাভ করে থাকে যেখানে বিপরীত লিংগের সেক্সে এই হার ৫৭ পারসেন্ট।
http://www.huffingtonpost.com/…/lesbians-more-orgasms-strai…
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন