(সুমিত রায়)
অর্গাজম গ্যাপ নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে Anindya Ganguly সেক্সুয়াল রোলপ্লে এর কথা আনেন। বিষয়টা নিয়ে আরও অনেকেই নিজেদের মতামত শেয়ার করেন, আমিও কিছু কমেন্ট করেছি। অনেক বড় হয়ে গেছে, তাই সেগুলোকেই এক করে একটা পোস্ট আকারে দিচ্ছি...
অর্গাজম গ্যাপ নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে Anindya Ganguly সেক্সুয়াল রোলপ্লে এর কথা আনেন। বিষয়টা নিয়ে আরও অনেকেই নিজেদের মতামত শেয়ার করেন, আমিও কিছু কমেন্ট করেছি। অনেক বড় হয়ে গেছে, তাই সেগুলোকেই এক করে একটা পোস্ট আকারে দিচ্ছি...
প্রথমে একটা কথা বলে নেই, অরগাজম গ্যাপ আর সেক্সুয়ালি ডোমিনেন্স
সাবমিসিভনেস এগুলো ডিফরেন্ট কনসেপ্ট। কেউ সেক্সুয়ালি সাবমিসিভ থাকাই পছন্দ
করছে তার মানে এই নয় যে তিনি অরগাজম লাভ করেন না। সেক্সুয়ালি সাবমিসিভনেস,
ডোমিনেন্স এগুলো সেক্সুয়াল রোলপ্লে মাত্র। এর সাথে নারী স্বাধীনতা, অরগাজম
গ্যাপ, সোশ্যাল সাপ্রেশন, পেট্রিয়ার্কি ইত্যাদির মধ্যে যেমন একটা সম্পর্ক
তৈরি করা যায়, তেমনি এগুলোর বাইরেও এই রোলপ্লে এর একটা স্বাধীন জায়গা আছে।
এখন Anindya Ganguly এর কথায় আসি। তিনি বলেছিলেন, বাঙ্গালী নারীরা জেনারেলি সেক্সুয়াল সাবমিসিভ হয়ে থাকে। আমি জানিনা তিনি অর্গাজম গ্যাপের সাথে এর সম্পর্ক তৈরি করছেন কিনা, কিন্তু এই সাবমিসিভ রোলপ্লে অরগাজম গ্যাপ থেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট হয়। এখন তার কথার সত্যতা নিয়ে বলি। সত্য হচ্ছে শুধু বাঙ্গালী নারী নয়, সারা পৃথিবীর নারীই সাধারণত জেনেটিকালি সাবমিসিভ হবার প্রবণতা দেখায়। আরও যোগ করি, সারা পৃথিবীর পুরুষই জেনেটিকালি ডোমিনেন্ট হবার প্রবণতা দেখায়। এটার উৎস্য আমাদের জেনেটিক্সে, আমাদের বিবর্তনগত ইতিহাসে। এই ধরণের প্রবণতা আমাদের হান্টারার গ্যাদারার সোসাইটি আমাদের সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু এর মানে কিন্তু এই না যে এটাই ঠিক, এটা মনে করলে তা নেচারালিস্টিক ফ্যালাসি হয়ে যাবে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে আমরা সেক্সুয়ালি কিরকম ডোমিনেন্ট বা সাবমিসিভ হতে চাই তা নির্ভর করে আমাদের শরীরে থাকা টেস্টোস্টেরনের পরিমাণের উপর। যেহেতু পুরুষের শরীরে নারীদের চেয়ে বেশি টেস্টোস্টেরন বেশি থাকে তাই তারা সেক্সুয়ালি ডোমিনেন্ট হবার প্রবণতা দেখায়, আবার যেহেতু নারীদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন কম থাকে তাই তাদের মধ্যে সাবমিসিভ হবার প্রবণতা কাজ করে। একটি পরীক্ষায় নারীদের উপর টেস্টোস্টেরন প্রবেশ করিয়ে দেখা যায় টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি পাবার সাথে সাথে নারীর ডোমিনেশন, এগ্রেসিভনেস বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এবারে একটু বেসুরে কথা বলি। নারী আর পুরুষে গড়পড়তায় এরকম প্রবণতা থাকলেই যে সবাই তা করতে চাবেন এমনটা নয়, টেন্ডেন্সি আর ইচ্ছাও এক নয়। আবার বিজ্ঞান সব মানুষকে নারী পুরুষের বাইনারি জগতে ফেলেও না। এছাড়া সব কিছু এরকম রিজিডিটি দিয়ে দেখাও যায় না। প্রাণীজগতে আমাদের নিকট আত্মীয়দের মধ্যেও রোল সুইচ করতে দেখা যায়, মানুষের মধ্যে তো বটেই। দেখা যায় পর্নসাইটগুলোর মধ্যে অনেকগুলোতেই পুরুষকে সাবমিসিভ হতে দেখা যাচ্ছে, পুরুষরা সেগুলো এঞ্জয়ও করছে। যখন নিউরোসাইন্টিস্টদের কাছে এর কারণ জানতে চাওয়া হল। তারা বললেন, এটা হয় কারণ সেই পুরুষেরা তখন তাদের ফিমেল সাবমিসিভ সারকিট্রির সংস্পর্শে আসে যা তার মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সেন্টারের সাথেও সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং দেখা যায় আমরা সকলেই রিজিডলি নারী ও পুরুষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে থাকি না, এখানে পরিবেশগত একটা ফ্যাক্টর তো আছেই, কিন্তু বায়োলজিকালিও না। আর এই রোলগুলোকেও শুধুমাত্র সাবমিসিভ, ডোমিনেন্ট হিসেবে স্থুলভাবে দেখা ঠিক না, এখানেও অনেক ভেরিয়েশন আছে। এখান থেকে আমরা দেখি নারী ও পুরুষের বৈশিষ্ট্যগুলো পুরোপুরিভাবে ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট না। ভেতরে ধুসরের ছায়া বা ফিফটি শেডস অব গ্রে আছে...
কিন্তু সমাজ, বিশেষভাবে বললে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ শুধু সাদাকালোই পছন্দ করে। এটি নারী এবং পুরুষের বাইনারি ধারণাতেই বিশ্বাসী, নারীর উপর সর্বদা 'নারীত্বের' বৈশিষ্ট্য ও পুরুষের উপর 'পুরুষত্বের' বৈশিষ্ট্য চাপিয়ে দিতে চায়। তাই আমাদের সমাজে এমন স্টেরিওটাইপ ও এক্সপেক্টেশন তৈরি করা হয় যাতে পুরুষরা সবসময় ডোমিনেন্ট এবং নারীরা সাবমিসিভ হয়। প্রভাবটা পুরুষদের উপরেও পরে। যেমন সবসময় ডোমিনেটিং রোলপ্লে করতে হবে, বেশি ইমোশনাল হওয়া যাবে না, সবসময় স্ত্রীর কথা শোনা যাবে না ইত্যাদি। এগুলো করলে তিনি নাকি রিয়েল ম্যান হতে পারবেন না, তাকে পৌরুষহীন, স্ত্রৈণ ইত্যাদি বলা হবে। এটার বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যে সত্তরের দশকে মেনস লিবারেশন মুভমেন্টও শুরু হয়েছিল। যাই হোক, নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে বিশেষ সোশ্যাল রোলপ্লে করার ক্ষেত্রে, বা রোল কি হবে তা সমাজ খুব ভালভাবেই ঠিকে করে দিতে চায়। আর সেক্সুয়াল রোলও এর আওতার বাইরে না।
সুতরাং, সেক্সুয়াল সাবমিসিভনেস বা ডোমিনেন্স অর্গাজম গ্যাপের কারণ হয়না, অরগাজম গ্যাপের কারণ হয় 'আমাকে সবসময় সাবমিসিভ হয়ে থাকতে হবে', 'আমাকে সবসময় ডোমিমেট করতে হবে' এই ধারণাগুলো, যা সমাজ কর্তৃক তৈরি বা সোশাল কনস্ট্রাকশন।
(এখানে একটা বিষয়ে সতর্ক করছি। এখানে ডোমিনেন্ট, সাবমিসিভ কথাগুলো সেক্সুয়াল রোলপ্লে অর্থে ব্যবহৃত। কোনভাবেই চারিত্রিক ডোমিনেন্স, সাবমিসিভনেসকে এখানে নির্দেশ করা হচ্ছে না। আর এটাও নির্দেশ করা হচ্ছে না যে নারীরা এগ্রেসিভ, ডোমিনেটিভ এবং 'ব্যাড বয়'দেরকে বেশি পছন্দ করে। গবেষণায় দেখা গেছে বেশি ডোমিনেটিভদের ক্ষেত্রে নারীরা কম আকৃষ্ট হয়, আর নারীরা 'ব্যাডবয়'দের পছন্দ করে এটা একটা মিথ। চাইলে এই বিষয়েও আলোচনা চলতে পারে। )
এখন Anindya Ganguly এর কথায় আসি। তিনি বলেছিলেন, বাঙ্গালী নারীরা জেনারেলি সেক্সুয়াল সাবমিসিভ হয়ে থাকে। আমি জানিনা তিনি অর্গাজম গ্যাপের সাথে এর সম্পর্ক তৈরি করছেন কিনা, কিন্তু এই সাবমিসিভ রোলপ্লে অরগাজম গ্যাপ থেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট হয়। এখন তার কথার সত্যতা নিয়ে বলি। সত্য হচ্ছে শুধু বাঙ্গালী নারী নয়, সারা পৃথিবীর নারীই সাধারণত জেনেটিকালি সাবমিসিভ হবার প্রবণতা দেখায়। আরও যোগ করি, সারা পৃথিবীর পুরুষই জেনেটিকালি ডোমিনেন্ট হবার প্রবণতা দেখায়। এটার উৎস্য আমাদের জেনেটিক্সে, আমাদের বিবর্তনগত ইতিহাসে। এই ধরণের প্রবণতা আমাদের হান্টারার গ্যাদারার সোসাইটি আমাদের সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু এর মানে কিন্তু এই না যে এটাই ঠিক, এটা মনে করলে তা নেচারালিস্টিক ফ্যালাসি হয়ে যাবে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে আমরা সেক্সুয়ালি কিরকম ডোমিনেন্ট বা সাবমিসিভ হতে চাই তা নির্ভর করে আমাদের শরীরে থাকা টেস্টোস্টেরনের পরিমাণের উপর। যেহেতু পুরুষের শরীরে নারীদের চেয়ে বেশি টেস্টোস্টেরন বেশি থাকে তাই তারা সেক্সুয়ালি ডোমিনেন্ট হবার প্রবণতা দেখায়, আবার যেহেতু নারীদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন কম থাকে তাই তাদের মধ্যে সাবমিসিভ হবার প্রবণতা কাজ করে। একটি পরীক্ষায় নারীদের উপর টেস্টোস্টেরন প্রবেশ করিয়ে দেখা যায় টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি পাবার সাথে সাথে নারীর ডোমিনেশন, এগ্রেসিভনেস বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এবারে একটু বেসুরে কথা বলি। নারী আর পুরুষে গড়পড়তায় এরকম প্রবণতা থাকলেই যে সবাই তা করতে চাবেন এমনটা নয়, টেন্ডেন্সি আর ইচ্ছাও এক নয়। আবার বিজ্ঞান সব মানুষকে নারী পুরুষের বাইনারি জগতে ফেলেও না। এছাড়া সব কিছু এরকম রিজিডিটি দিয়ে দেখাও যায় না। প্রাণীজগতে আমাদের নিকট আত্মীয়দের মধ্যেও রোল সুইচ করতে দেখা যায়, মানুষের মধ্যে তো বটেই। দেখা যায় পর্নসাইটগুলোর মধ্যে অনেকগুলোতেই পুরুষকে সাবমিসিভ হতে দেখা যাচ্ছে, পুরুষরা সেগুলো এঞ্জয়ও করছে। যখন নিউরোসাইন্টিস্টদের কাছে এর কারণ জানতে চাওয়া হল। তারা বললেন, এটা হয় কারণ সেই পুরুষেরা তখন তাদের ফিমেল সাবমিসিভ সারকিট্রির সংস্পর্শে আসে যা তার মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সেন্টারের সাথেও সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং দেখা যায় আমরা সকলেই রিজিডলি নারী ও পুরুষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে থাকি না, এখানে পরিবেশগত একটা ফ্যাক্টর তো আছেই, কিন্তু বায়োলজিকালিও না। আর এই রোলগুলোকেও শুধুমাত্র সাবমিসিভ, ডোমিনেন্ট হিসেবে স্থুলভাবে দেখা ঠিক না, এখানেও অনেক ভেরিয়েশন আছে। এখান থেকে আমরা দেখি নারী ও পুরুষের বৈশিষ্ট্যগুলো পুরোপুরিভাবে ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট না। ভেতরে ধুসরের ছায়া বা ফিফটি শেডস অব গ্রে আছে...
কিন্তু সমাজ, বিশেষভাবে বললে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ শুধু সাদাকালোই পছন্দ করে। এটি নারী এবং পুরুষের বাইনারি ধারণাতেই বিশ্বাসী, নারীর উপর সর্বদা 'নারীত্বের' বৈশিষ্ট্য ও পুরুষের উপর 'পুরুষত্বের' বৈশিষ্ট্য চাপিয়ে দিতে চায়। তাই আমাদের সমাজে এমন স্টেরিওটাইপ ও এক্সপেক্টেশন তৈরি করা হয় যাতে পুরুষরা সবসময় ডোমিনেন্ট এবং নারীরা সাবমিসিভ হয়। প্রভাবটা পুরুষদের উপরেও পরে। যেমন সবসময় ডোমিনেটিং রোলপ্লে করতে হবে, বেশি ইমোশনাল হওয়া যাবে না, সবসময় স্ত্রীর কথা শোনা যাবে না ইত্যাদি। এগুলো করলে তিনি নাকি রিয়েল ম্যান হতে পারবেন না, তাকে পৌরুষহীন, স্ত্রৈণ ইত্যাদি বলা হবে। এটার বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যে সত্তরের দশকে মেনস লিবারেশন মুভমেন্টও শুরু হয়েছিল। যাই হোক, নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে বিশেষ সোশ্যাল রোলপ্লে করার ক্ষেত্রে, বা রোল কি হবে তা সমাজ খুব ভালভাবেই ঠিকে করে দিতে চায়। আর সেক্সুয়াল রোলও এর আওতার বাইরে না।
সুতরাং, সেক্সুয়াল সাবমিসিভনেস বা ডোমিনেন্স অর্গাজম গ্যাপের কারণ হয়না, অরগাজম গ্যাপের কারণ হয় 'আমাকে সবসময় সাবমিসিভ হয়ে থাকতে হবে', 'আমাকে সবসময় ডোমিমেট করতে হবে' এই ধারণাগুলো, যা সমাজ কর্তৃক তৈরি বা সোশাল কনস্ট্রাকশন।
(এখানে একটা বিষয়ে সতর্ক করছি। এখানে ডোমিনেন্ট, সাবমিসিভ কথাগুলো সেক্সুয়াল রোলপ্লে অর্থে ব্যবহৃত। কোনভাবেই চারিত্রিক ডোমিনেন্স, সাবমিসিভনেসকে এখানে নির্দেশ করা হচ্ছে না। আর এটাও নির্দেশ করা হচ্ছে না যে নারীরা এগ্রেসিভ, ডোমিনেটিভ এবং 'ব্যাড বয়'দেরকে বেশি পছন্দ করে। গবেষণায় দেখা গেছে বেশি ডোমিনেটিভদের ক্ষেত্রে নারীরা কম আকৃষ্ট হয়, আর নারীরা 'ব্যাডবয়'দের পছন্দ করে এটা একটা মিথ। চাইলে এই বিষয়েও আলোচনা চলতে পারে। )
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন